বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, মাহে রমজান পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস। কুরআন হচ্ছে মানবজাতির জন্য পথ-নির্দেশিকা, সত্য মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টিকারী। কুরআন মুত্তাকীনদের সঠিক পথের দিশা দেয়। কুরআনের পথ নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হলে তাক্বওয়ার গুণ অপরিহার্য। আল্লাহর বিধানকে মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টার জন্য তাক্বওয়ার গুণ দরকার। এই তাক্বওয়ার গুণাবলী অর্জন করার জন্যই রমজান মাসের রোজা ফরজ করা হয়েছে।
রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কদমতলী পূর্ব থানার উদ্যোগে আয়োজিত পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য ও কদমতলী পূর্ব থানা আমীর আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা ওমর ফারুক, আতিকুর রহমান, মতিউর রহমান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
ড. মাসুদ বলেন, পবিত্র মাহে রমযান গুনাহ মাফের মাস। এ মহিমান্বিত মাসে বেশি বেশি ইবাদাত-বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনই মুমিন জীবনের কাক্ষিত লক্ষ্য। যে ব্যক্তি রমযান মাস পেল অথচ গোনাহ মাফ করে নিতে পারলো না সে অবশ্যই ভাগ্য বিড়ম্বিত। তাই আমাদেরকে পবিত্র মাহে রমযানের শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে যথাযথভাবে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হবে। এ মাসে যাকাত প্রদান করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে ভূমিকা রাখা প্রতিটি মুসলমানের অবশ্যই কর্তব্য। তিনি যথাযথভাবে যাকাত প্রদানের মাধ্যমে আর্ত-মানবতার কল্যাণে কাজ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আরোও বলেন, রমযানে দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতির ফলে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে, তিনি অবিলম্বে সরকারকে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে এসে অসহায় দরিদ্র মনুষের দূর্ভোগ লাঘবের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জামায়াতের গণমুখী রাজনীতি, আদর্শ ও মূল্যবোধ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ফলে জামায়াত এখন গণমানুষের কাছে আস্থাশীল ও অধিকতর গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক দল। তাই জনগণকে ফ্যাসীবাদী দুঃশাসন থেকে মুক্ত করতে এবং সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় জামায়াত নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে অবৈধ ও জুলুমবাজ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার কায়েমের জন্য দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আব্দুস সবুর ফকির বলেন, রমযান হচ্ছে রহমত, বরকত, ও নাজাতের মাস। রমযানের রোজা ফরজ করা হয়েছে তাক্বওয়া তথা খোদাভীতির গুণাবলী অর্জনের জন্য। রাসূলে কারীম (সা.) বলেছেন, ‘যে রোজা রাখলো অথচ মিথ্যা কথা, মিথ্যা কাজ এবং পাপাচার ছাড়তে পারলো না, তার না খেয়ে থাকায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।’ আজ আমাদের সামজে রোজাদারের সংখ্যা কম নয়, সেই তুলনায় সৎ, ন্যায়নিষ্ঠ এবং খোদাভীরু লোকের সংখ্যা কম; এর কারণ রোজা শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি,পরিবার ও সমাজ জীবনে কার্যকর হচ্ছে না। বরং সর্বত্র অন্যায়, অনাচার, পাপাচার, দুর্নীতি ক্যান্সারের মত বিস্তার লাভ করছে। আমরা যদি একটি সুখী, সমৃদ্ধ, সংঘাতমুক্ত, অন্যায়, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ পেতে চাই তবে একদল সৎ ও খোদভীরু লোকের হাতে নেতৃত্ব অর্পণ করতে হবে। রমযানের রোজা সে ধরনের একদল লোক তৈরির জন্য আমাদের মাঝে এসেছে। রোজার শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে তাকওয়ার গুণাবলী অর্জন এবং সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় সকলকে এগিয়ে আসার জন্য তিনি আহ্বান জানান।