বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন সর্বযুগের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। পৃথিবীতে তিনি আগমণ করেছেন মানবজাতির মুক্তির দূত হিসেবে। তাঁর আদর্শ অনুসরণের মধ্যেই নিহিত আছে সকল মানুষের মুক্তি ও কল্যাণ। তাঁর আদর্শ অনুসরণ করলে সকল ধর্মের মানুষই সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। মহানবী (সা.) এর আদর্শ ছিল মহান আল্লাহ তায়ালার নাজিলকৃত সর্বশেষ আসমানি কিতাব আল-কুরআন। বর্তমান অশান্ত পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে মহাগ্রন্থ আল-কুরআন এবং রাসূল (সা.) এর সুন্নাহর কোন বিকল্প নেই। মানুষের রচিত কোন মতবাদই পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। তাই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক মুক্তি ও শান্তির পথ খুঁজে পেতে গোটা মানবজাতিকে কুরআন ও সুন্নাহর পথেই ফিরে আসতে হবে। তিনি জীবনের সকল ক্ষেত্রেই রাসুল (সা.) আদর্শ অনুসরণ করতে সকলের প্রতি আহবান জানান।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ আয়োজিত সীরাতুন্নবী (সা.)এর আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমীর মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহঃ সেক্রেটারি এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, কামাল হোসাইন, ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মু. আব্দুল জাব্বার, আ.জ.ম রুহুল কুদ্দুস আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য মাহবুবুর রহমান, আশরাফুল আলম ইমন, শাহীন আহমদ খান প্রমুখ।
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, রাসুল (সা.) ছিলেন সকল মানুষের জন্য ন্যায়-ইনসাফের প্রতীক। আইয়ামে জাহেলিয়াতের অন্ধকার ও তমসার বিপরীতে সত্য এবং ন্যায়কে তিনি সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। মহানবী (স) মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম অনুসরণীয় আদর্শ। তিনি দৃঢ়তা, ধৈর্য ও নিষ্ঠার সাথে তার ওপর অবতীর্ণ মহাগ্রন্থ আল কুরআনের আদর্শ প্রতিষ্ঠার মহান দায়িত্ব পালন করেছেন। এজন্য তাকে নির্মমভাবে নির্যাতিত ও রক্তাক্ত হতে হয়েছিল। বর্তমানে যারা রাসূলের রেখে যাওয়া আদর্শ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে যাচ্ছেন তাদের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়। কাফের ও মুসলিম নামধারী কিছু মুনাফিকদের ষড়যন্ত্র এখনো অব্যাহত রয়েছে। ঐক্যবদ্ধ ভাবে সকল জুলুম-নির্যাতন ও ষড়যন্ত্র মুকাবেলা করেই আমাদেরকে সত্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী আন্দোলনকে বেগবান করে বিজয়ের মঞ্জিলে নিয়ে যেতে হবে।
মন্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আল্লাহর দাসত্ব ও মহানবী (স.) এর আদর্শ থেকে বিচ্যুতির কারণেই মানব সভ্যতা ও মূল্যবোধ এখন খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থায় রাসুলের আদর্শকে বাদ দিয়ে সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছে ফলে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মানবতার বন্ধু হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি শিক্ষা ব্যবস্থায় রাসুলের সীরাত ও আদর্শকে পুনরায় প্রতিষ্ঠা ও সমাজের সকলের মাঝে রাসুলের সিরাতকে ছড়িয়ে দেওয়ার আহবান জানান। রাসুল (সাঃ) মানুষের অধিকার রক্ষায় অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন। বর্তমান ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার সামাজিক অবক্ষয় ও পতন রোধ করে মানবতাবোধ জাগ্রত করার জন্য, মানুষের অধীকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের রাসুল (সাঃ) শিক্ষা ও আদর্শ সমাজে বাস্তবায়ন করতে হবে।
ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, রাসুল (সা.)ছিলেন বিশ্ব মানবতার মহান শিক্ষক। মার্কিন পন্ডিত মাইকেল হার্ট মহানবী (স.)কে সর্বযুগের ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দার্শনিক ও বুদ্ধিজীবী জর্জ বার্ণাডশ তাঁকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা দিয়েছেন। আমাদের ঈমানের দাবীর আলোকে মুহাম্মদ (সা.) এর শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পৃথিবীর কোন মানুষের সার্টিফিকেটের প্রয়োজন নেই বরং আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁকে আল কোরআনে সুরা আহযাবে শ্রেষ্ঠতম আদর্শের যে স্বীকৃতি দিয়েছেন তাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। আমাদের কাজ হচ্ছে সেই আদর্শকে ধারন করে নিজের ব্যাক্তি ও সমাজ জীবনকে গঠন করা। তিনি সমাজে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় সকলকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে সমবেত হওয়ার আহবান জানান।